
অনলাইন ডেস্ক: মুক্তিযোদ্ধা চাচা সোনা মিয়াকে বাবা দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বগুড়ার ডিসি অফিসে সরকারি চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহিন মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়,চাকরি পাওয়ার পর চাচাকে তার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিতও করেছেন তিনি। ভুক্তভোগী সোনা মিয়া এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবদুস সামাদ জানিয়েছেন,এ নিয়ে তদন্ত চলছে। শাহিন মিয়ার দাবি, রাজা মিয়া তার বাবা হলেও কাগজে-কলমে মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়া তার বাবা।
বর্তমানে অসুস্থ ও শয্যাশায়ী মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়া। তার অভিযোগ করেছেন,তার ছোট ভাই রাজা মিয়ার ছেলে শাহিন মিয়া সোনাতলার ভেলুরপাড়ার এনায়েত আলী হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদপত্রে বাবার নাম রাজা মিয়ার পরিবর্তে আর নাম দেয়। ওই সনদপত্র ও তার মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৯৯৯ সালে বগুড়া জেলা প্রশাসকের অফিসে রাজস্ব খাতে পিয়ন পদে চাকরি পায়। প্রথমে সোনাতলার মধুপুর ইউনিয়নের হরিখালী ভূমি অফিসে যোগ দেয়। শাহিন বর্তমানে নন্দীগ্রাম উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত। কিন্তু বিয়ের কাবিননামায় শাহিন তার বাবার নাম রাজা মিয়া উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, শাহিন তার উত্তরাধিকারী হিসেবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে চাকরি নেয়। এরপর কৌশলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার দাবিদার সাজে। এছাড়া তাকে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে।
মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) এবং দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ ছাড়াও নোটারি পাবলিকের সামনে এফিডেভিট করেছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবদুস সামাদ তার কার্যালয়ে ২৪ এপ্রিল এ নিয়ে শুনানি করেন।
তিনি জানান,শাহিন মিয়ার ব্যাপারে এখনও তদন্ত চলছে। শিগগিরই উভয়পক্ষকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। এরপর এ ব্যাপারে মন্তব্য করা সম্ভব না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন,চাচাকে বাবা সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় সরকারি চাকরি নেওয়া শাহিন প্রভাবশালী। সে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে এ চাকরি পেয়েছে। তার অপরাধ ধামা চাপা দিতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন। ফলে তার এ অপরাধের ব্যাপারে কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
শাহিন মিয়াও এলাকায় বলছেন, ‘সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা তার ভক্ত। তাই এ ব্যাপারে কেউ তার কিছু করতে পারবে না।’
এ প্রসঙ্গে শাহিন মিয়া পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘কাগজ সত্য না মুখের কথা সত্য? আমার বাবার নাম রাজা মিয়া হলেও কাগজে-কলমে আমি মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়ার ছেলে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির কাছে উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন।’
পাঠকের মতামত